অসহায় সাধারণ রোগী খুমেক হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্স সমিতির দাপট বেড়েই চলেছে

অসহায় সাধারণ রোগী খুমেক হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্স সমিতির দাপট বেড়েই চলেছে

খুলনা বিভাগ

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্স বাণিজ্যে প্রতারিত হচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগী। এ্যাম্বুলেন্স চালক সমিতি গঠন করে রোগীদের নিকট থেকে কয়েক গুণ বেশী ভাড়া আদায় করা হয়। বহিরাগত এ্যাম্বুলেন্সে রোগী আনা গেলেও হাসপাতাল থেকে অন্যত্র নিতে সমিতির দ্বারস্ত হওয়া লাগে। সমিতির আওতায় প্রতিদিন এখানে তিন শতাধিক এ্যাম্বুলেন্স চলাচল করে আসছে।

রোগী পরিবহনের জন্য চালকরা সিরিয়াল দিয়ে হাসপাতাল চত্বর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। তাদের অনেকেরই গাড়ির রুট পারমিটের মেয়াদ শেষ, কাগজপত্র ঠিক নেই। কিছু মাইক্রোবাস মালিক সেসব গাড়িকেই এ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে দেদারসে ব্যবসা করে যাচ্ছে । অথচ নেই অক্সিজেনসহ রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা। আর এসব সম্ভব হচ্ছে কোন নীতিমালা না থাকার কারণে।

প্রতিকারে স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি বিআরটিএ থেকেও নেই কার্যকর পদক্ষেপ। কিভাবে অন্য কাজে ব্যবহার করা গাড়িটি এ্যাম্বুলেন্স হয়ে গেল সে কথা জানালেন কয়েক জন চালক। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতাল, শিশু হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারী হাসপাতালে প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্সে রোগী আনা-নেয়া করা হয়। তার বেশীর ভাগই মান সম্মত নয়। বহু চালকের নেই বৈধ লাইসেন্স। মুমুর্ষ রোগীর জন্য এসব এ্যাম্বুলেন্স মোটেও নিরাপদ নয়। নজরদারী না থাকায় এ্যাম্বুলেন্স সেবার নামে চলছে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা।

অথচ কিছু সাধারণ শর্ত মেনে স্বয়ং সম্পূর্ণ একটি এ্যাম্বুলেন্সে রোগীর জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকতে হয়। এর মধ্যে গ্রাফিক্স, অক্সজেন সিলিন্ডার ও মাস্ক, স্ট্রেচার, জরুরী চিকিৎসা সরঞ্জাম, রোগীর শয্যা ও চিকিৎসক বসার ব্যবস্থা, লাইফ সাপোর্টের ব্যবস্থা, কার্ডিয়াক মনিটর যার কোন কিছুই নেই বেশীর ভাগ এ্যাম্বুলেন্সে।

চিকিৎসকরা জানালেন, এ্যাম্বুলেন্সে এসব সুযোগ সুবিধা না থাকলে তা হয়ে উঠতে পারে মরণ ফাঁদ। এসব এ্যাম্বুলেন্সের ওপর বিআরটিএর দৃশ্যমান কোন নজরদারি না থাকায় ওই সেবা এখন বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা জানালেন বিআরটিএ’র একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট।

তিনি বলেন, এ্যাম্বুলেন্স সেবার মান নিয়ে খুব একটা খুশি হতে না পারলেও অনেকটা নিরুপায় হয়েই এই সেবা নিতে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের।খুমেক হাসপাতালে এক রোগীর স্বজন জাহীদুল ইসলাম লাভলু। তিনি জানান, কিছু দিন আগে তার পিতা স্টোকে আক্রান্ত হলে এখানে নিয়ে আসেন। সরকারি হাসপাতাল হলেও প্রতি পদে-পদে টাকা দেয়া লাগে। রোগী ট্রলিতে করে বেডে আনতে গেলে অথবা নামাতে গেলে প্রতিবারে এক থেকে দু’শ টাকা দিতে হয়। পরীক্ষার জন্য অন্য কোথাও নিতে হলে সিরিয়ালে থাকা এ্যাম্বুলেন্স ডাকা লাগে। শহরের মধ্যে এক হজার টাকা ভাড়া নেয়।

বাইরের থেকে এ্যাম্বুলেন্স রোগি নিয়ে ভিতরে আসতে পারে। তবে নিয়ে যেতে পারে না। ইজিবাইকে রোগী নিতে হলেও সিরিয়ালে থাকা চালকদের সঙ্গে কথা বলতে হয়। বাইরের থেকে ইজিবাইক ভিতরে এসে রোগী নিতে দেয়া হয় ন। হাসপাতালের দারেয়ানের সাথে ইজিবাইক চালকদের চুক্তি থাকে। সব মিলিয়ে সাধারণ রোগীরা প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হয়।

বিষয়টি নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: রবিউল হাসান দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, এক সময়ে হাসপাতাল ক্যাম্পাসের ভিতরে বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স ঘোরাঘুরি করত। পরে তাদেরকে পুলিশ এবং ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে বের করে দেয়া হয়। এখন ক্যাম্পাসের বাইরে কে কি করছে তানিয়ে কর্তৃপক্ষের কিছু বলার নেই। তবে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ঠ করার চেষ্টা হলে ছাড় দেয়া হবে না।

বিষয়টি নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: রবিউল হাসান দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, এক সময়ে হাসপাতাল ক্যাম্পাসের ভিতরে বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স ঘোরাঘুরি করত। পরে তাদেরকে পুলিশ এবং ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে বের করে দেয়া হয়। এখন ক্যাম্পাসের বাইরে কে কি করছে তানিয়ে কর্তৃপক্ষের কিছু বলার নেই। তবে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ঠ করার চেষ্টা হলে ছাড় দেয়া হবে না।

Tagged

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.