ব্রিটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফোর্ড হাবিল এ প্রসঙ্গে বলেছেন, বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন মহাবিশ্ব একটি বিস্ফোরণে মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু আমরা জানি, যে কোন বিস্ফোরণের ফলে যেসব উপাদান ছিটকে পড়ে তা কখনোই কোন নিয়ম মেনে বা সুশৃঙ্খলভাবে বেরোয় না। কিন্তু মহাবিস্ফোরণ বা বিগ ব্যাং’র ক্ষেত্রে এর উল্টো ঘটনাটি ঘটেছে। এটা বিস্ময়কর। কাজেই বিগ ব্যাং’র মাধ্যমে যদি কোন সুশৃঙ্খল ও সুনিপুণ ব্যবস্থা সৃষ্টি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, সেখানেই ঐশি হস্তক্ষেপ ছিল। অন্যদিকে পৃথিবী নামক গ্রহের অস্তিত্বও বিস্ময়কর।
এটি এমন একটি গ্রহ যেখানে প্রাণিকূলের জীবন যাপনের জন্য সব ব্যবস্থা করা আছে যা কোন ভাবেই দুর্ঘটনাক্রমে হওয়া সম্ভব নয়। কাজেই আমরা যে পৃথিবীতে বসবাস করছি তা এমন এক সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বেরই প্রমাণ বহন করছে যিনি শুন্য থেকে সব কিছুই সৃষ্টি করেছেন এবং সৃষ্টিতে সুনিপুণ শৃঙ্খলা দিয়েছেন। ঐশী প্রত্যাদেশ বা ওহী এবং বুদ্ধিমত্তা বা আকল মানুষের জ্ঞান অর্জনের দু’টি প্রধান উৎস। মহান আল্লাহ নবী-রাসূলদের কাছে যে ওহী পাঠিয়েছেন তার সুবাদে মানুষের কাছে বিশ্ব জগতের অনেক রহস্য ও বাস্তবতা স্পষ্ট হয়েছে। মানুষ তার প্রতিভা বা আকলকে কাজে লাগিয়ে, অভিজ্ঞতা ও প্রচেষ্টার সুবাদেও কিছু জ্ঞান অর্জন করে।
এ দুই উৎসের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে চিন্তাবিদরা যুগে যুগে অনেক গবেষণা করেছেন। অনেকে মনে করেন আধুনিক বিজ্ঞানের অনেক তথ্য বা মত পবিত্র কোরআনের বিষয়বস্তুগুলোর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তারা একে কোরআনের বৈজ্ঞানিক অলৌকিকতা বলে অভিহিত করেন। প্রাকৃতিক বিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞান বা তথ্য আমাদের কাছে বিশ্ব জগতের অনেক রহস্য উন্মোচন করে এবং মহান আল্লাহর অশেষ শক্তি, ক্ষমতা, নৈপুণ্য ও শৈল্পিক কুশলতা সম্পর্কে চিন্তার খোরাক জোগায়। মহান আল্লাহ বহু আকাশ ও জমিনগুলোসহ এর মধ্যকার সব কিছু ছয় যুগে সৃষ্টি করেছেন বলে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেছেন। এ বক্তব্য নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। ফ্রান্সের মরিস বুকাইলি ও লাপ্লাস, রাশিয়ার জর্জ গামুফ মনে করেন- কোরআনের দেয়া তথ্যগুলো নতুন বৈজ্ঞানিক বাস্তবতাগুলোর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
এ মহাগ্রন্থের ৭৫০টিরও বেশি আয়াতে সৃষ্টি জগতের রহস্য নিয়ে বক্তব্য এসেছে। সৃষ্টি জগতের নানা বিষয় নিয়ম ও লক্ষ্যের চাহিদা অনুযায়ী নিজ নিজ ভূমিকা পালন করে চলেছে। সৃষ্টির নানা বিস্ময়কর নিদর্শন স্রষ্টার মহত্ত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব এবং বিশ্ব জগতের কাঠামো সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করে। যেমন, গ্রহ-নক্ষত্রের নানা ভূবন বা জগত রয়েছে যেখানে এসব গ্রহ নক্ষত্রের মধ্যাকর্ষণ ক্ষমতা, শৃঙ্খলার চলক ও রক্ষণাবেক্ষণ নিজ নিজ অক্ষপথকেন্দ্রীক। বিজ্ঞানী নিউটন মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আবিষ্কারের পর এর চেয়েও আরো গভীর বাস্তবতার সন্ধান পেয়েছেন। তিনি বলেছেন, “গ্রহ-নক্ষত্রের জগতের নানা বিস্ময় ব্যাখ্যা করার জন্য কেবল মাধ্যাকর্ষণ শক্তির ব্যাখ্যাই যথেষ্ট নয়। আসলে অত্যন্ত শক্তিশালী ও মহাজ্ঞানী এক উৎস এসব গ্রহ-নক্ষত্রের চলার পথ, গতি, ব্যবধান প্রভৃতি সূক্ষ্মভাবে হিসেব করেছেন এবং এসব গ্রহ-নক্ষত্রকে নির্দিষ্ট অক্ষ পথে স্থাপন করেছেন। আর এই উৎসই হলেন খোদা।
” পবিত্র কোরআনের সূরা রাদের ২ নম্বর আয়াতে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সম্পর্কে ইশারা রয়েছে। এ আয়াতে বলা হয়েছে, “আল্লাহ, যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে অদৃশ্য স্তম্ভ দিয়ে বা দৃশ্যমান স্তম্ভ ছাড়াই। অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন ( তথা বিশ্ব পরিচালনার নিয়ন্ত্রণকে নিজ ক্ষমতার আওতায় এনেছেন) । এবং সূর্য ও চন্দ্রকে স্থাপন করেছেন। প্রত্যেকে নির্দিষ্ট সময় মোতাবেক আবর্তন করে। তিনি সব বিষয় পরিচালনা করেন, নিদর্শনগুলো প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা স্বীয় পালনকর্তার সাথে সাক্ষাত সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাসী হও।
” মহান আল্লাহ কোরআনের আয়াতে আকাশগুলোকে তারকারাজি দিয়ে সুশোভিত বা সাজানোর কথা বলেছেন। এসব বিষয়ে চিন্তাভাবনা করার উৎসাহ দিয়ে তিনি বলেছেন, “তারা কি তাদের উপরস্থিত আকাশের পানে তাকায় না আমি কিভাবে তা নির্মাণ করেছি এবং সুশোভিত করেছি? তাতে কোন ছিদ্র বা ফাটলও নেই।” মহান আল্লাহ সুর্য ও এর আলো, চাঁদ ও এর গতির কথা এবং সুপরিকল্পিতভাবে এসব সৃষ্টির কথা বলেছেন।
কুরআন সম্পর্কে সবাই যাতে জানতে পারে এই জন্য পোস্ট টি শেয়ার করে জানানো আপনার নৈতিক দায়িত্ব।
প্রচারে : মোঃ সাব্বির হোসেন