কুরআনের অলৌকিকতা, বিজ্ঞান ও কুরআন! পর্ব-০৩ KHULNATV

কুরআনের অলৌকিকতা, বিজ্ঞান ও কুরআন! পর্ব-০৩

ধর্ম ও জীবন

জ্যোতি-পদার্থ বিদ্যা বা এস্ট্রোফিজিক্সের সাম্প্রতিক গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, আমাদের সৌর জগত বা সূর্যকেন্দ্রীক এই মহাকাশে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাইরের ছায়াপথমুখী একটি প্যাঁচানো গতি রয়েছে। সূরা ইয়াসিনের ৩৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, সূর্য তার নির্দিষ্ট অক্ষ বা অবস্থানের দিকে সব সময় গতিশীল বা আবর্তন করে। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ, আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ। সূরা নুহের ১৫ ও ১৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “তোমরা কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ কিভাবে সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন।

এবং সেখানে চন্দ্রকে রেখেছেন আলোরূপে এবং সূর্যকে রেখেছেন প্রদীপরূপে।” ভূপৃষ্ঠ বা পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য ও এর গঠন এবং সৃষ্টি কৌশল নিয়ে বক্তব্য রয়েছে পবিত্র কোরআনে। অতীতে মানুষ মনে করত পৃথিবী স্থির। মহান আল্লাহ সূরা নামলের ৮৮ নম্বর আয়াতে বলেছেন, তুমি পর্বতমালাকে দেখে অচল মনে কর, অথচ সেদিন এগুলো মেঘমালার মত চলমান।” অনেক তাফসিরকারক মনে করেন পাহাড়ের গতিশীলতার কথা বলে কোরআন আসলে পৃথিবী যে গতিশীল সেটাই হয়তো বলতে চেয়েছে। পৃথিবী যে গতিশীল তার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে। সূরা ত্বাহা’র ৫৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “তিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে শয্যা বা দোলনা করেছেন এবং তাতে চলার পথ করেছেন, …” দোলনার ধীর গতির দোলা যেমন শিশুকে প্রশান্ত করে এবং তার চোখে ঘুম নিয়ে আসে তেমনি পৃথিবীও মানুষের জন্য ধীর গতির দোলার মাধ্যমে প্রশান্তি দেয়।

পৃথিবী যে গোলক আকৃতির বা গোলাকার তাও কোরআন পরোক্ষভাবে উল্লেখ করেছে। মহান আল্লাহ সূরা মাআরেজের ৪০ নম্বর আয়াতে বলেছেন, “আমি শপথ করছি উদয়াচল ও অস্তাচলগুলোর পালনকর্তার, নিশ্চয়ই আমি সক্ষম!” এখানে কয়েকটি পূর্ব ও কয়েকটি পশ্চিমের কথা বলা হয়েছে। পৃথিবী সমতল হলে তাতে কেবল একটি পূর্ব ও একটি পশ্চিম দিক থাকত। কিন্তু গোলাকার হওয়ায় সব জায়গাতেই একটি পূর্ব ও একটি পশ্চিম দিক তথা উদয়াচল ও অস্তাচল রয়েছে। সৃষ্টি তত্ত্ব বা রহস্য বর্ণনা করে কোরআন মানুষকে আল্লাহমুখী বা আল্লাহর পরিচিতির দিকে আকৃষ্ট করতে চায়। মানুষের হাতের মুঠোয় এত যে ব্যাপক নেয়ামত এনে দেয়া হয়েছে তা থেকে বোঝা উচিত মানুষকে বিনা উদ্দেশ্যেই এসব নেয়ামত ও শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়নি। তাই মানুষকেও এ বিশ্ব জগতে তার অবস্থান ও দায়িত্ব বুঝতে হবে। কোরআনের সূরা আম্বিয়ায় এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, “আমি আকাশ ও জমিনে যা কিছু আছে তা খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।

“ প্রখ্যাত মুফাসসির আল্লামা তাবাতাবায়ি’র মতে, কোরআনে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের নানা শাখাসহ জ্ঞানের সব শাখার তথ্য রয়েছে এবং কোরআন এসব জ্ঞান মানুষকে উপহারদিয়েছে তার কল্যাণ, সৌভাগ্য ও মুক্তির জন্য। তবে শর্ত হল মানুষকে প্রকৃত বিশ্বদৃষ্টি, যার মূলে রয়েছে আল্লাহর পরিচিতি- সেই বিশ্বদৃষ্টি নিয়ে এসব জ্ঞান চর্চা করতে হবে। কারণ, যেসব জ্ঞান মানুষকে মূল্যহীন বিষয়ে ব্যস্ত রাখে এবং আল্লাহকে ও বাস্তবতাকে চেনা বা জানা থেকে বিরত রাখে কোরআনের দৃষ্টিতে তা অজ্ঞতার সমতুল্য। (ইসলামের দৃষ্টিতে কোরআন

Tagged

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.