ডেসটিনির সাবেক কর্মচারী মিজানুরের বিরুদ্ধে চতুর্থ মামলা নোয়াখালীতে

অন্যান্য

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ডেসটিনির সাবেক কর্মচারী মিজানুর রহমান(এফসিএস) এর বিরুদ্ধে প্রতারণার দায়ে আবারও নোয়াখালী বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলী আদালতে এ কে এম ফখরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং ৩৪৮/২১ইং তারিখ ইং-১৭/১০/২১। একই সাথে আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য ওসি ডিবি নোয়াখালীকে নির্দেশ দিয়েছেন। এই নিয়ে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথকভাবে মোট চারটি মামলা দায়ের হল।

মামলার বিবরণে জানা যায়, আসামি মিজানুর রহমান ডেসটিনি গ্রুপের/ সেক্রেটারি ছিল। বাদী ও ১-৪ নং সাক্ষী ডেসটিনি গ্রুপের বিনিয়োগকারী ছিল । সেই সূত্রে বাদী ও ১-৪ নং সাক্ষীর সহিত আসামির পরিচয় । উপরোক্ত আসামি বাদী ও ১-৪ নং সাক্ষী কে জানাই যে, ঢাকায় তেজগাঁওস্থ আলপনা চিত্র (প্রাইভেট লিমিটেড)৮৩,পশ্চিম তেজতুরি বাজার ফার্মগেট সিনেমা হলটির মালিক আসামি এবং তাহার নামেই ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন হইতে ট্রেড লাইসেন্স নম্বর -১১৯১৯১/২০১৯ইং করা হয় এবং উক্ত সিনেমা হলটি পরিচালনা করার জন্য তাহার কয়েকজন লোক দরকার তাদেরকে সে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দিবে যতদিন মালিকানা তার থাকবে ততদিন চাকরি করিতে পারিবে। উপরোক্ত বাদী ও ১-৪ নং সাক্ষী আসামীর সহিত যোগাযোগ করলে আসামি জানায় যে, চাকরি করিতে হইলে তাহাকে ৪,০০,০০০/-(চার লক্ষ) টাকা করিয়া জামানত হিসেবে দিতে হইবে এবং সহকারি ম্যানেজার/ হিসাবরক্ষকের নিচে নহে পদে চাকুরি দিবে এবং ঐ পদে মাসিক বেতন কমপক্ষে ২৫,০০০/- (পঁচিশ হাজার) টাকা বেতন হবে। যদি কখনো প্রতিষ্ঠান অন্যত্র বিক্রয় করিয়া দেয় তাহলে জামানত হিসেবে নেওয়া ৪,০০,০০০/-( চার লক্ষ) টাকা ফেরত দিয়ে দিবে এবং টাকা নেওয়ার ০২ (দুই) মাসের মধ্যে চাকুরি দিতে ব্যর্থ হইলে লিখিত চুক্তি অনুযায়ী পরবর্তী ০২(দুই)মাসের মধ্যে নেওয়া টাকা ফেরত দিয়ে দিবে। সেই মোতাবেক বাদী ও ১-৪ নং সাক্ষী আসামীর সহিত কথাবার্তা চূড়ান্ত করে এবং কথা হয় যে, শর্ত অনুযায়ী টাকা জোগাড় করে খবর দিলে আসামি বাদীর বাসা হইতে চুক্তি সম্পাদন করে টাকা আনবে।

এমতাবস্থায় বাদী টাকা জোগাড় করিলে বাদী আসামিকে সংবাদ দেয় এবং ১ম ঘটনার তারিখ, সময় ও স্থানে এসে উল্লেখিত সাক্ষীদের মোকাবেলায় বাদী হইতে নগদে (১০০০২০০) একুনে ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা নেয়। বক্রী ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা লিখিত চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করার সময় দিবে মর্মে ০৫/০৩/২০২০ইং তারিখ ধার্য্য করিয়া আসামি বাদী হইতে নগদে ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা নিয়া স্বাক্ষীদের সামনে গুনিয়া নিয়ে যায়। ২য় ঘটনার তারিখ, সময় ও স্থানে বাদী হইতে আসামী বক্রী (১০০০২০০) একুনে ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা নগদে বুঝিয়া নিয়া বাদীকে (১০০+১০০+১০০) একুনে৩০০/- টাকা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখাইয়া উহাতে লিখিত চুক্তিপত্র প্রস্তুত করিয়া বাদীকে আসামি মূল চুক্তিনামা এবং আসামির সৃজিত ১১৯১৯১নং ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি যাহা আসামীর নামে উক্ত কাগজপত্র গুলো বাদীকে প্রদান করে। আসামি বলে টাকা নেওয়ার ০২ (দুই) মাস বা ৬০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ০৫/০৩/২০২০ইং হইতে পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে বাদীকে আলপনা ছায়াচিত্র সিনেমা হলে চাকুরি দিবে। নতুবা বাদী হইতে নেওয়া বাদীর টাকা ফেরত দিবে। আসামী কর্তৃক বাদীকে দেওয়া সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও চাকুরি না দিয়া ঘুরাইতে থাকে।

পরবর্তীতে বাদী ও স্বাক্ষীগণ উক্ত সিনেমা হলের বর্তমান ম্যানেজার মোঃ শামসুদ্দিন রাকিব এর সহিত যোগাযোগ করলে সে জানায় যে, উক্ত সিনেমা হলের মালিক ডেসটিনি গ্রুপ পি.এস-২ কোর্টের আদেশে উক্ত প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করিতেছে। আসামি প্রতারণামূলকভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে অত্র ভূয়া ট্রেড লাইসেন্স সৃষ্টি করিয়াছে। মিজানুর রহমান অত্র সিনেমা হলের কেহ নহে তাহার সহিত সিনেমাহলের মালিকানার কোন সম্পর্ক নাই। তৎকারণে বাদী ১-৪নং স্বাক্ষীগণ সহ কতেক ব্যক্তিদেরকে নিয়ে ৩য় ঘটনার দিন অর্থাৎ ৩য় ঘটনার তারিখ, সময় ও স্থানে আসামির সহিত এক সালিশ বৈঠকে মিলিত হয়। বৈঠকে আসামি বাদী হইতে চাকু্রী দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে। কিন্তু বাদী হইতে আসামির নেওয়া চারলক্ষ টাকা ফেরত দিতে বলিলে আসামী টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করিয়া ৩য় ঘটনাস্থল হইতে উঠিয়া চলিয়া যায়। বাদী আপোষে টাকা উদ্ধার করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এবং মামলা দায়ের করিতে বিলম্ব হওয়ার কারণ সহ সমুদয় প্রমান আদালতে উপস্থাপন করেন।

উল্লেখ্য ডেসটিনির থেকে দুর্নীতির দায়ে বহিস্কৃত কর্মচারী মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রতারণার দায়ে কুমিল্লা চীফ জুডিশিয়াল ১নং আমলি আদালতে হারুন মিয়া বাদী হয়ে প্রথম মামলা দায়ের করে। এরপর কক্সবাজার বিজ্ঞ সিনিয়র চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দ্বিতীয় মামলটি করেন, মোঃ আনছারুল করিম,
রমনা থানায় তৃতীয় মামলাটি করেন, বৈশাখী টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ নোয়াখালীতে চতুর্থ মামলাটি দায়ের হলো।

এবিষয়ে বহিষ্কৃত সেক্রেটারি মিজানুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিক বার চেষ্টা করেও তাহার নাম্বার বন্ধ থাকার করণে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.