পাইকগাছায় জমি সহ ঘের দখল করেছে আ'লীগ নেতা সমীরণ সাধু সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ_khulna tv

পাইকগাছায় জমি সহ ঘের দখল করেছে আ’লীগ নেতা সমীরণ সাধু সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

বাংলাদেশ

আদালতে দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা চলমান থাকাবস্থায় ক্ষমতার দাপট

পাইকগাছা (খুলনা) সংবাদদাতা: খুলনা পাইকগাছায় কোর্ট দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা চলমান থাকাবস্থায় উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি সমিরন সাধুর বিরুদ্ধে জমি সহ মৎস ঘের লুটপাট ও দখলের অভিযোগে রবিবার দুপুরে পাইকগাছা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলার হিতামপুর গ্রামের আঃ হামিদ মোড়লের পুত্র মোঃ মাকছুদুর রহমান। তিনি বলেন, মেকেলপুরাইকাটী গ্রামের মৃত অধীর সাধুর ছেলে সমিরন কুমার সাধু, একজন দুর্দান্ত, প্রভাবশালী, জনবলে, অর্থবল ও পেশীবলে বলিয়ান এবং পর সম্পদলোভী ব্যক্তি। তিনি সর্বদা নিজেকে ক্ষমতাধর নেতা ও ধর্মীয় নেতা হিসেবে জাহির করে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে চলেছে।

তিনি উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ এর সভাপতি হওয়ায় ধরাকে স্বরাজ্ঞান করেন যখন তখন। ধর্মীয় ও ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কপোতক্ষের চর দখল করে অবৈধভাবে ইট ভাটা নির্মাণ ও প্রস্তুত করে সহ বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছেন। যেটা আপনারা অনুসন্ধান করলেই পেয়ে যাবেন। কয়েক বছর পুর্বে তিনি সামান্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। রাতারাতি আজ তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। যে কারণে অবৈধ অর্থের বিনিময়ে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা হয়ে নিজেকে খুব ক্ষমতাধর বলে জাহির করেন। তার অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে চাইলেও কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।

আমি খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার হিতামপুর মৌজার এস, এ ৩৭৮ খতিয়ানের ১৭৭ দাগ সহ অন্য দাগে মোট ১২ বিঘা জমি ক্রয় ও ডিডমুলে প্রায় ৬ বছর যাবত শান্তিপুর্ণভাবে মৎস্য লীজ ঘের করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। কিন্তু গত বেশ কিছুদিন পুর্বে সমিরন সাধু অবৈধ ইট ভাটার পাশে আমার মৎস্য ঘের হওয়ায় আমার মৎস্য ঘেরের উপর তার কু-নজর পড়ে। গত আগস্ট মাসে আমাদের ঘের দখল করার মানসে আমার পিতা সহ আমাকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিতে থাকে।

সে কারণে আমি গত ১৬ আগষ্ট/২১ পাইকগাছা থানায় একটি জিডি করি। যার নং- ৯৪০, জিডি করার কারণে সমিরন সাধু আমার উপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন রকম হুমকি দিতে থাকে। আমি গত ২২ আগষ্ট ২০২১ তারিখে পাইকগাছা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে নিষেধাজ্ঞা বাবদ দেওয়ানী মামলা করি। যার ১নং বিবাদী সমিরন সাধু। যার নং- ২৫৮/২১, দেচওয়ানী মামলার শোকজ নোটিশ প্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে আরো ক্ষিপ্ত হন। উপায়ন্ত না পেয়ে আমার পিতা জান মালের নিরাপত্তা চেয়ে পাইকগাছা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১০৭ ও ১১৭ ধারায় মামলা করেন। আগামী ইং- ১২/১০/২১ তারিখে সমিরন সাধুকে স্বশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার সমন দেন বিজ্ঞ আদালত।

আমাদের আশংকা সত্যি করে গত ০৪/০৯/২১ তারিখ শনিবার সকালে সমিরন সাধুর নেতৃত্বে তার ভাই বিষ্ণু সাধু, কৃষ্ণ সাধু, বিশ্বজিত সাধু ও মুকুল মোড়ল সহ অজ্ঞাতনামা ২৫/৩০ জন ভাড়াটিয়া গুন্ডা বাহিনী নিয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার মৎস্য ঘেরে অনধিকার প্রবেশ পুর্বক দখল করার জন্য হাজির হয়। সমিরন সাধুর নির্দেশে গুন্ডা বাহিনী আমার মৎস্য লীজ ঘেরে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরতে থাকে। এ সময় আমার ঘেরের নেট পাটা কেটে ক্ষতি সাধন করে এতে আমার প্রায় দেড় লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন হয়। প্রায় ৪ বিঘা জমির মধ্যে তান্ডব চালিয়ে বেড়া, নেট ও মাটির বাঁধ দিতে থাকে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন আনে। ঘের দখল ও ক্ষতি সাধন করায় আমি গত ০৪/০৯/২১ তারিখ পাইকগাছা থানায় একটি এজাহার দাখিল করি।

আমার প্রতি এরুপ প্রতিহিংসা পরায়ন হওয়ার নেপথ্যে আমি উপলব্ধি করেছি যে, এ অঞ্চলে বড় কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। তার অন্তরায় এই সমিরন সাধু গং। আমি নিরন্তন চেস্টা করে এলাকায় সুধীজনদের সাথে মত বিনিময় করে এই এলাকায় একটা বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করার জন্য সকলে মিলে আগ্রহ প্রকাশ করি এবং আমি সহ স্থানীয় সুধীজনদের যৌথ উদ্যোগ নিয়ে সাবেক জন প্রশাসন সচিব, বর্তমান সিনিয়র সচিব জনাব ইউসুফ হারুনের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে যোগাযোগ করি। তার দেওয়া প্রতিশ্রুতি মত এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে নুন্যতম ৪ বিঘা জমির প্রয়োজন হবে, এই জমি তোমরা দেখ এবং ক্রয়ের ব্যবস্থা করো।

স্থানীয় সুধী শেখ রুহুল কুদ্দুস, শেখ ফারুক আহম্মেদ, পিযুষ সাধু, সুবোল সাধু আমি সহ সকলের সম্মিলিত প্রচেস্টায় জমি ক্রয় করে জনাব ইউসুফ হারুনের মায়ের নামে প্রস্তাবিত আকলিমা খাতুন ভোকেশনাল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট কলেজ প্রতিষ্ঠা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে নির্ধারিত স্থান ‘‘প্রস্তাবিত আকলিমা খাতুন ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট কলেজের নামে ফলকের একটি সাইনবোর্ড আমি সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম, খালিদ হোসেন সিদ্দিকীর উপস্থিতিতে সাইনবোর্ডটি স্থাপন করি। সেই থেকেই সমিরন সাধু আমার এবং আমার পরিবারের ক্ষতি সাধন করার জন্য বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করতে থাকে, কারণ কলেজ হলে তার অবৈধ ভাটা থাকবে না। যার বাস্তব উদাহরণ আমাদের ঘের দখল ও ক্ষতি সাধন করছে এই সমিরণ সাধু। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সমিরণ সাধুর ব্যাপারে প্রশাসন ও রাজনৈতিক উদ্ধতন নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Tagged

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.