মোঃ খাইরুল ইসলাম চৌধুরীঃ নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানার পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারি দুর্ণীতিবাজ ও চরিত্রহীন মাহমুদ মোল্ল্যাকে অপসারনের দাবীতে মানববন্ধনও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ০৪ অক্টোবর (সোমবার) সকাল ১০ টায় ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে পহরডাঙ্গা ভুমি অফিসের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করলে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারী করেন। পরবর্তীতে মুলশ্রী রাস্তার পাশে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বসহ সকল শ্রেনীপেশার মানুষ অংশগ্রহন করে বলেন, তার (মাহামুদ মোল্যা) বিরুদ্ধে প্রমানসহ বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্ণীতি ও নারী কেলেংকারির বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সেবা প্রার্থীরা ২৫ মে/২১ ইং তারিখে ওই কর্মকর্তার দূর্ণীতির চিত্র তুলে ধরে তার অপসারনের দাবিতে নড়াইল জেলা প্রশাসাক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে।
কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সে তার অপকর্ম চালিয়েই যাচ্ছে। ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ মাহামুদ মোল্যার অনিয়ম, দুর্ণীতি ও অনৈতিক কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ ইউনিয়নবাসী অসহায় মা-বোনদের ইজ্জত রক্ষার্থে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেছেন বলে জানান। মানববন্ধনে বীর মুক্তিযোদ্ধা শামছুল শেখ, মোঃ নান্টু কাজী, মামুন শেখ, তৌহিদ শেখ ও মুলশ্রী ফাউন্ডেশনের সভাপতি জাকির শিকদারসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন। বক্তারা জানান, মাহামুদ মোল্যা প্রায় দেড় বছরের অধিককাল পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন ভুমি অফিসে যোগদান করেছেন।
ওই কর্মকর্তা ভুমি অফিসে আসার পর ভুমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে গেলে তাকে অফিসে পাওয়া যায়না। মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি এখন বাহিরে আছি আপনি সন্ধার পর মিরাজের বাড়িতে (তার ভাড়া বাসা) আসেন। সাক্ষাতের পর পূর্বের দাখিলা দেখালে তিনি তার কোন মুল্যায়ন না করে বলেন, এ দাখিলা সঠিক নিয়মে কাঁটা হয়নি এবং পূর্বের উপ-সহকারী কর্মকর্তার প্রসঙ্গ তুললে তিনি বলেন, পূর্বের উপ-সহকারী কর্মকর্তা কিভাবে দিয়েছে সেটা তার ব্যাপার। আমার কাছ থেকে নিতে হলে গোড়া থেকে খাজনা পরিশোধ করতে হবে বলে অতিরিক্ত টাকার হিসাব দেন এবং ওই টাকার আংসিক দাখিলায় তুলে বাকীটা নিজেই আত্মসাৎ করেন।
দাখিলায় কম টাকা উঠানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারকে ফাঁকি দিয়ে আপনাকে অল্পের ভিতরে হিসাব দিয়েছি, অতিরিক্ত টাকা অডিট খরচ বাবদ রাখছি বলে বুঝ দেন। এ ছাড়া ভুমি দস্যুদের সাথে আতাৎ করে সরকারী জমির মাটি ও গাছ বিক্রির বিস্তর অভিযোগও রয়েছে তার নামে। জমির নামজারী করার নিয়ম জানতে গেলে ওই কর্মকর্তা ভুমি মালিকদের তার সাথে চুক্তিতে আসতে বাধ্য করেন এবং বলেন আমার তদন্ত রিপোর্ট ছাড়া নামজারী হবেনা। এভাবে ভুমি মালিকদের জিম্মি করে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচের হিসাব চাপিয়ে দেন।
অবশেষে সেবা প্রার্থীরা জমি ঠিক করার জন্য ওই টাকা দিতে বাধ্য হয়। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত গৃহহীনদের জন্য বরাদ্দকৃত ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ওই উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ মাহামুদ মোল্যা ৪০/৫০ হাজার টাকা দাবী করেন এবং বিধবাও অসহায় মহিলাদের ঘর পাইয়ে দেওয়ার জন্য শারীরিক মেলামেশার প্রস্তাব দেন। ওই কর্মকর্তার বিরেুদ্ধে নারীসহ বিবস্ত্র অবস্থায় ধরা পড়ার প্রমান রয়েছে বলে বক্তারা জানান।
নারীলোভী, ঘুষখোর, দুর্ণীতিবাজ উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ মাহামুদ মোল্যার এহেন কর্মকান্ডে ইউনিয়নবাসী সরকারী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের ছবি, ভিডিও ও অডিও রেকর্ড প্রমান স্বরুপ সংরক্ষিত আছে বলে তারা জানান। ভুক্তভোগীরা অনতিবিলম্বে এর উপযুক্ত বিচারসহ ওই উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ মাহামুদ মোল্যার অপসারন দাবী করেছেন।