আল্লাহর কাছে রোজাদারদের মর্যাদা_khulna tv

আল্লাহর কাছে রোজাদারদের মর্যাদা কত!

ধর্ম ও জীবন

আল্লাহর কাছে রোজাদারদের মর্যাদা কত!

মাহফুজ আল মাদানী: মহান আল্লাহর বাণী, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ রোজা ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর। যেন তোমরা তাকওয়াবান হতে পার’ (সুরা আল বাক্বারা : ১৮৩)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, তোমাদের নিকট রমজানের বরকতময় মাস এসেছে। এর রোজা আল্লাহ তোমাদের উপর ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ রাখা হয়। এতে অবাধ্য শয়তানসমূহকে শৃঙ্খলিত করা হয়। আল্লাহর রহমতের জন্য এতে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাস অপেক্ষাও শ্রেয়। যে এর কল্যাণ হতে বঞ্চিত হয়েছে, সে প্রকৃতপক্ষেই বঞ্চিত হয়েছে’ (আহমদ ও নাসায়ী)।

এ মাসকে সাহাবায়ে কেরামগণ বরণ করে নিতেন ভিন্নভাবে। ইবাদত-বন্দেগীর জন্য সবাই দুনিয়াবী কার্যকলাপ কমিয়ে নিতেন। এ মাসের রোজা রাখার জন্য মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোজা রাখবে’ (সুরা আল বাক্বারা : ১৮৫)। এ মাসের রোজা পূর্ববর্তী গুণাহসমূহকে ক্ষমা করে দেয়। ‘হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াবের আশায় রমজান মাসের রোজা রাখে তার পূর্বের সমুদয় গুণাহ মাফ হবে। যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াবের আশায় রামজানের রাতে ইবাদতে কাটাবে তারও পূর্বের গুণাহ সমূহ মাফ করে দেয়া হবে এবং যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াবের আশায় ক্বদরের রাতে ইবাদতে কাটাবে তারও পূর্বকৃত সমূদয় গুণাহ মাফ করা হবে’ (বোখারী ও মুসলীম)।

রমজানের রোজার গুরুত্ব ও মর্যাদা অত্যধিক। যে রোজা কিয়ামতের দিন বান্দাহর জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে। আর তার সুপারিশও আল্লাহ তাআলার দরবারে গৃহীত হবে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, রোজা এবং কোরআন (কিয়ামতের দিন) বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে প্রতিপালক! আমি তাকে খাদ্য ও কাম প্রবৃত্তি হতে দিনের বেলায় বাধা প্রদান করেছি। সুতরাং তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। কুরআন বলবে, আমি তাকে রাতের বেলায় ঘুম হতে বাধা প্রদান করেছি। সুতরাং তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। তখন উভয়ের সুপারিশ কবুল করা হবে’ (বায়হাকী)। এ সম্মানীত মাসে প্রত্যেক ভালো কাজের প্রতিদানকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়া হয়। ‘হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, আদম সন্তানের প্রতিটি নেক আমল দশগুণ হতে সাতশগুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়ে থাকে। আল্লাহ বলেন, তবে রোজা এর ব্যতিক্রম। কেননা, রোজা একমাত্র আমারই জন্য রাখা হয় আর আমিই এর প্রতিদান দেব (আমার যত ইচ্ছা)। বান্দা আমারই জন্য নিজের প্রবৃত্তি, পানাহার পরিহার করে থাকে। (বোখারী ও মুসলীম)।

Tagged

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.