ঈদের আগেই বাজারে আসছে বাংলাদেশে উৎপাদিত স্যামসাং স্মার্টফোন
মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে স্যামসাং ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন উৎপাদনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।
আগামী পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগেই বাজারে আসছে বাংলাদেশের কারখানায় উৎপাদিত বিশ্বখ্যাত স্যামসাং ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন। স্যামসাংই প্রথম আন্তর্জাতিক স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যারা বাংলাদেশে উৎপাদন শুরু করল।
ফেয়ার ইলেকট্রনিক্সের চিফ মার্কেটিং অফিসার জানান, ঈদের আগেই বাংলাদেশের কারখানায় উৎপাদিত স্যামসাং স্মার্টফোন বাজারজাত করা হবে। দেশের বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রযুক্তিসেবা প্রতিষ্ঠান ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স বাংলাদেশে স্মার্টফোন উৎপাদনের জন্য স্যামসাংয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এরই মধ্যে নরসিংদীতে কারখানা স্থাপন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ফেয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান রুহুল আলম আল মাহবুব, স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর স্যাংওয়ান ইউন, ফেয়ার ইলেকট্রনিক্সের চিফ মার্কেটিং অফিসার মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন ও স্যামসাং বাংলাদেশের হেড অব মোবাইল মুঈদুর রহমান বক্তৃতা করেন।
এদিকে বাংলাদেশে স্যামসাংয়ের কারখানা স্থাপন করে স্মার্টফোন উৎপাদনের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার।
তিনি সমকালকে বলেন, ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, আমরা আমদানিকারক থেকে উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হতে চাই। বাংলাদেশে মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন শুরু সেই ঘোষণারই বাস্তবায়ন। এর আগে দেশীয় ব্র্যান্ড উৎপাদন শুরু করেছে। এখন সেই ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড স্যামসাং যুক্ত হল। এটি দেশের জন্য নি:সন্দেহে ভাল খবর।
সংবাদ সম্মেলনে ফেয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের দর্শনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স দেশেই বিশ্বমানের স্মার্টফোন তৈরিতে উৎসাহিত হয়েছে। বাংলাদেশের কারখানায় উৎপাদনের ফলে দেশের বাজারে আগের চেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে স্যামসাং ব্র্যান্ডের ফোন পাওয়া যাবে। নরসিংদীতে স্থাপিত ৫৮ হাজার বর্গফুটের কারখানায় প্রথম পর্যায়ে তিনটি লাইনে সাশ্রয়ী মূল্যের মডেলের ফোরজি ফোন উৎপাদন করা হবে। পর্যায়ক্রমে স্যাংমসাংয়ের অন্যান্য পর্যায়ের মডেলের স্মার্টফোন উৎপাদনও শুরু হবে। এ কারখানার মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে পাঁচ শতাধিক এবং পরোক্ষভাবে আরও বড় পরিসরে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ শ্রমিক তৈরিতে বড় অবদান রাখবে এই কারখানা।
তিনি জানান, দেশে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন উৎপাদনে কারখানা স্থাপনে বিনিয়োগের সুরক্ষা জরুরি বিষয়। এ জন্য দেশে অবৈধ পথে হ্যান্ডসেট আসা বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
অবৈধ পথে আসা হ্যান্ডসেটে মোবাইল অপারেটরদের সিমকার্ড সচল না হলে চোরাচালান নিরুৎসাহিত হবে বলেও মত দেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন সহায়ক নীতিমালা তৈরির জন্যও সরকারের নীতি নির্ধারকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
স্যামসাং বাংলাদেশের এমডি বলেন, স্যামসাং ফেয়ার ইলেকট্রনিক্সের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নতুন মোবাইল উৎপাদন কারখানা ঘোষণা করতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত।
স্যামসাং বাংলাদেশের হেড অব মোবাইল জানান, কারখানা স্থাপনে সম্পূর্ণ বিনিয়োগ করেছে ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স। আর স্যামসাং তার বিশ্বমানের প্রযুক্তি সহায়তা দিচ্ছে। এ কারখনায় উৎপাদনে স্যামসাংয়ের গুণগত মান অক্ষুণ্ণ থাকবে।