শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণায় উৎফুল্ল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রস্তুত হচ্ছে শ্রেণিকক্ষ

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণায় উৎফুল্ল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রস্তুত হচ্ছে শ্রেণিকক্ষ

বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার সাব্বির হোসেন : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার খবরে দারুণ খুশি খুলনার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ অবসানের পর অবশেষে ১২ সেপ্টেম্বর হতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হতে যাচ্ছে। একটানা ১৭ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শ্রেণিকক্ষ থেকে শুরু করে আশপাশের এলাকা ময়লা-আবর্জনায় ছেয়ে গেছে। এ জন্য নগরীর বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রেণিকক্ষের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে মেঝে পরিষ্কারের চিত্র।


গত রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। একই সঙ্গে এসএসসি, এইচএসসি ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস প্রতিদিন চলবে বলেও জানান মন্ত্রী।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার খবরে উৎফুল্ল শিক্ষার্থীরা স্কুল ড্রেস, পাঠ্যবই এবং স্কুল ব্যাগ গোছানো শুরু করেছে। নতুন শ্রেণিতে উন্নীত হলেও এখন পর্যন্ত একটি ক্লাসও পায়নি। সে হিসেবে ১২ সেপ্টেম্বর হতে যাচ্ছে তাদের প্রথম ক্লাস।


সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রের অভিভাবক আক্তারুজ্জামান বলেন, আমার ছেল নতুন ক্লাসে উঠেছে। কিন্তু বছরের আট মাস পার হলেও শ্রেণিকক্ষে যেতে পারেনি। এ জন্য সে বারবার স্কুল কবে খুলবে প্রশ্ন করে। সবসময় খবরের দিকে চোখ রাখতো, কবে স্কুল খোলার ঘোষণা আসবে। তিনি আরও বলেন, স্কুল খোলার ঘোষণার পরই মোবাইলে আমাকে প্রথমে খবর জানায়। সে যে কতটা উৎফুল্ল বলে বোঝানো যাবে না। এখন সে পাঠ্যবই থেকে শুরু করে খাতা, কলম, স্কুল ড্রেস এবং স্কুল ব্যাগ সব গোছগাছ করে রেখেছে ১২ সেপ্টেম্বরের জন্য। আমিও চাই কোনোভাবেই যেন এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হয়।


সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর অভিভাবক বলেন, স্কুল খোলার ঘোষণায় আমার মেয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে আমাকে স্কুল ব্যাগ থেকে শুরু করে খাতা, কলমসহ বিভিন্ন জিনিস কেনার তালিকা হাতে ধরিয়ে দিয়েছে। দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলায় খুবই আনন্দিত মেয়ে। একই সঙ্গে আমার ছেলেও দারুণ খুশি।

নগরীর সরকারি ইকবাল নগর বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। অভিভাবকরাও চাচ্ছেন সন্তানকে ক্লাসে পাঠাতে। সরকারের এ ঘোষণায় শিক্ষকরাও খুশি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শ্রেণিকক্ষ থেকে শুরু করে খেলার মাঠে ময়লা-আবর্জনা জমেছে। তবে শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। তৃতীয়-দশম শ্রেণি পর্যন্ত আটটি ক্লাসের ১৬টিরও অধিক কক্ষ রয়েছে। এ ছাড়া আরও কিছু কক্ষ আছে। এ কাজ একদিনে সম্ভব হবে না। তবে দুই দিনের সব শ্রেণিকক্ষ ক্লাসের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে।

তবে সপ্তাহে ক’দিন ক্লাস নেয়া হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে এখনও নির্দেশনা আসেনি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ক্লাস পরিচালনা করবো। নগরীর কলেজিয়েট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপ্যাল তৌহিদুজ্জামান বলেন, শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে। আমরাও প্রস্তুত ছিলাম, যেকোনো সময় স্কুল খোলার ঘোষণা আসতে পারে। এতে কোনোভাবে যাতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে সমস্যায় পড়তে না হয়। সে জন্য আগেভাগেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজ শুরু হয়। জেলার বেশিরভাগ স্কুলের শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার করা হচ্ছে। কিছু স্কুল বাকি থাকলেও দু’একদিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যাবে।

Tagged

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.