সর্ব প্রথম, রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর একটি হাদীস সব সময় মাথায় রাখবেন, আর তা হল, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, স্বামী স্ত্রীর মাঝে শয়তানে ঝগডা লাগিয়ে দেয়,যাতে তারা একজন থেকে আরেক জন পৃথক হয়ে যায়। [১]
প্রথমে স্ত্রীর রাগ-অভিমানের কারণ নির্ণয় করে তার সুরাহা করা স্বামীর দায়িত্ব।
স্ত্রীর রাগারাগির সময় সঙ্গে সঙ্গে প্রতিউত্তর করে ঝগড়া না বাড়িয়ে বরং ধৈর্য্যশীলতার পরিচয় দিয়ে স্বামী চুপ থাকবে। সেখান থেকে তা সম্ভব না হলে, অন্য ঘরে চলে যাবে। এরপর স্ত্রীর মেজাজ ঠান্ডা হওয়ার পর দরদের সাথে বাস্তব অবস্থা বুঝিয়ে তার মান-অভিমান ও রাগ ভেঙ্গে দিতে হবে।
স্ত্রীর রাগ সামাল দেয়ার মত স্বামীর সামর্থ্য না থাকলে , তখন স্ত্রীর নিকটস্থ ঘনিষ্টজনদের ডেকে তাদের মাধ্যমে সমস্যা নিষ্পত্তি করতে হবে। [২]
.
স্বামীর উচিত স্ত্রীর সাধারণ ভুলগুলো ক্ষমা করা এবং পরবর্তীতে না করার জন্য হাসিমুখে শুধরে দেওয়া। স্ত্রী দোষ করে থাকলে বার বার তার দোষগুলো স্বামীর না বলাই উত্তম। অন্যথায় সমস্যা হতে পারে।
স্ত্রীকে তার পছন্দের হাদিয়া-উপঢৌকন দিবেন এবং একান্ত মুহূর্তে ইসলামের কথা, হেদায়াতের কথা বুঝাবে এবং স্ত্রীকে ইসলাম ভালভাবে বুঝার জন্য বই-পত্র কিনে এনে দিতে হবে।
.
এভাবে কৌশলের মাধ্যমে স্ত্রীর রাগ প্রশমিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং এক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি না করাই স্বামীর কর্তব্য।
কেননা,
.
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ “হে পুরুষেরা! তোমরা নারীদেরকে সর্বদা ভাল উপদেশ দাও। কেননা তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে আদম (আঃ) এর বাম পাঁজরের বাঁকা হাড় দিয়ে। তুমি যদি তাকে সোজা করতে চাও, তাহলে সে ভেঙ্গে যাবে। আর যদি একেবারে ছেড়ে দাও তাহলে সে বাঁকা হতেই থাকবে”। [৩]
তাহলে হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী স্ত্রীলোকদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে বাম পাঁজরের বাঁকা হাড় দিয়ে। তাদের আচরণের মাঝে কিছুটা বক্রতা থাকবেই।
অপরদিকে কেউ সেই বক্রতাকে একেবারে সোজা করার কল্পনা করা নিষ্ফল ও অলীক ধারণা। সে রকম কিছুতে তা ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা আছে বলে হাদীসে শরীফে সতর্ক করা হয়েছে।
তাই নারী তথা স্ত্রীর বক্রতাকে মেনে নিয়েই হিকমত ও কৌশলের সাথে ঠান্ডা মস্তিস্কে বুঝিয়ে তাদেরকে মানিয়ে নিয়ে ঘর সংসার চালিয়ে যাওয়াই স্বামীর প্রধান কর্তব্য।
আর মনে রাখা বাঞ্ছনীয় একজন স্ত্রীর তিনি ও একজন মানুষ। মন, ইচ্ছা ভালোলাগা খারাপলাগা তার ও থাকতে পারে। আর সবার বুঝ একি রকম হয় না। অনেকেই মনে করে আরেকটা বিয়ে করলে শান্তি পাবো। মূলত সেইখানে ও শান্তি মিলে না। শান্তি বিবাহে নয়, শান্তি থাকে মনে, বন্ধুত্বময় সম্পর্কে, নিজের সূখের চেয়ে অন্যকে সুখে রাখার মাঝে।
অন্যায় ভাবে জুলুমকারী কখনোই রেহাই পাবেনা। অবশ্যই স্বামীকে এর কঠিন জবাবদিহিতা করতে হবে আল্লাহর সামনে।তাই মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করি সুন্দর হোক ভালো থাকুক প্রতিটি সম্পর্ক (আমিন)।
❒ রেফারেন্সঃ
[১] সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ৫০৩৯।
[২] সূরাহ আন-নিসা, আয়াত : ৩৫।
[৩] সহীহ বুখারি, হাদিস নং ৫১৮৬।