শারদীয় দূর্গাৎসব ঘিরে প্রতিমা সাজাতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

সনাতন ধর্মাবিলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। ঘরে-ঘরে দেবীদূর্গার আগমনী বার্তা যেন কড়া নাড়ছে। আর হাতে গোনা কয়েকদিন পরই ঢাক, ঢোক আর সানাইয়ের সুরে শুরু হবে এ সনাতন ধর্মবিশ্বাসীদের এ বৃহৎ উৎসব। এ উৎসবকে পূর্ণঙ্গরূপ দানে তাই এখন চরম ব্যস্ত সময় পার করছেন নগরীর দৌলতপুরের মৃৎশিল্পীরা। আগামী ১১ অক্টোবর হতে ষষ্ঠী পূজার মধ্যেদিয়ে দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে শুরু হবে পাঁচ দিনের সনাতন ধর্মাবিলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা।

শারদীয় এই দুর্গোৎসব ঘিরে নগরীর দৌলতপুর থানার পাবলা সার্বজনীন কালীবাড়ী পূজা মন্দির, পাবলা বনিকপাড়া গাছতলা সার্বজনীন পূজা মন্দির, জয় মা রাধা বিনোদনী সার্বজনীন পূজা মন্দির, মাতৃ পূজা মন্দির, ঋষিপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির, দেয়ানা দাসপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির, পাবলা মধ্যপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির, পাবলা সাহাপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির, সরকারী বিএল কলেজ পূজা মন্দির, মহেশ্বরপাশা কালীবাড়ী সার্বজনীন মন্দির, বনিকপাড়া সার্বজনীন মন্দির, মজুমদার পাড়া সার্বজনীন চন্ডী পূজা মন্দির, ঘোষপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির, ঋষিপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির, ঋষিপাড়া দূর্গা মন্দির, সেনপাড়া মহেশ্বরপাশা ঋষিপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির, মল্লিকপাড়া সার্বজনীন মন্দির, আড়ংঘাটা সার্বজনীন কেন্দ্রীয় পূজা মন্দির, আড়ংঘাটা কাপালীপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দির চলছে প্রতিমা তৈরী ও সাজসজ্জার মহাৎসব। শেষ সময়ে দেবী দুর্গাকে আকর্ষণীয় সাজে সাজাতে মৃৎশিল্পীরা এখন ভীষণ ব্যস্ত। অধিকাংশ মন্দিরগুলোতে ইতোমধ্যেই প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ হয়েছে, বাকি আছে কারুশিল্পীর নিপুণ ছোয়ার রং তুলির আঁচড়।

সরেজমিনে দেখা যায়, মন্দির-মন্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরীর কাজে ব্যাপক ব্যস্ত নির্মাণ শিল্পীরা। সবখানেই যেন সাজ-সাজ রব। এ সকল মন্ডপের প্রতিমা নির্মাণের দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন অঞ্চল হতে মৃৎশিল্পীরা এসেছেন।

দেয়ানা দাসপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজে খুলনা দাকোপ থানার বাজুয়া গ্রাম হতে এসেছেন জয়দেব, জয় ও গৌরাঙ্গ মন্ডল। তারা জানান, প্রতিমা নির্মাণ কাজ শেষ। গত ১২ সেপ্টেম্বর হতে ১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ করলাম। আর রঙের কাজ আগামী ৮ সেপ্টেম্বর হতে শুরু করবো। ৬ষ্ঠী পূজার আগেই শেষ হয়ে যাবে। এ বছর নিজগ্রামে বাগেরহাট, ফকিরহাট আর দেয়ানায় কাজ করছি। পারিশ্রমিক তেমন ভালো পাইনি। তবে যেহেতু ধর্মীয় কাজ তাই অল্পতেই সন্তুষ্ট, যদিও এটা আমাদের পেশা। এর ওপর দিয়ে সংসার চলে। সারা বছর ধরতে গেলে তেমন কাজ থাকে না। শ্যামা কালী পূজা, লক্ষিপূজা, স্বরসতী পূজা কিছু কাজ থাকে। অধিকাংশ সময়ই শুয়ে বসে কাটাতে হয়। কেবলমাত্র দুর্গা পূজায় একটু ভালো সাড়া মেলে।

প্রতিমাশিল্পী জয় মন্ডল জানান, দিন যতই ঘনিয়ে আসছে আমাদের ব্যস্ততা বহুগুণ বেড়ে যাচ্ছে। প্রতিমাগুলোকে কিভাবে আরো সুন্দর করা যায় সেটা নিয়েই ব্যস্ততা। ইতিমধ্যে আমাদের প্রতিমার মাটির কাঠামোর কাজ শেষ হয়ে গেছে। এরপর তুলির ছোঁয়া, রং করে প্রতিমা মন্ডপে সাজানোর জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত করে দিয়ে তবেই শেষ হবে ব্যস্ততা।

দৌলতপুর হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাঃ সম্পাদক বলরাম দত্ত জানান, যেহেতু দেশে বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের হার কমে এসেছে। তবু আসন্ন পূজায় সকলকে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান মন্দিরে প্রবেশ করতে হবে। পাশাপাশি স্যানেটাইজার ব্যবহার, সামাজিক দূরত্বও মানতে হবে। এ সরকারি নির্দেশনা পূজা সকল কার্যক্রম যথারীতি চলবে, স্বল্প পরিসরে লাইটিং বা সাউন্ড ব্যবহার করা যাবে, তবে সর্বক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।

খুলনা টিভি/khulnatv