জেনে নিন ঢেঁড়স খাওয়ার ৫টি স্বাস্থ্য উপকারিতা!
ঢেঁড়স অত্যন্ত পুষ্টিকর ওষুধি গুণসম্পন্ন সবজি। সুস্বাস্থ্যের জন্য তাই এর গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। মজাদার এই সবজিটি সিদ্ধ ও ভাজি দুইভাবেই খাওয়া যায়। আবার তরকারি হিসেবে মাছেও ব্যবহার করা হয়।
ঢেঁড়সে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, লোহা ও ভিটামিন এ, বি, সি। এছাড়াও এতে রয়েছে ক্যারোটিন, ফলিক এসিড, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, অক্সালিক এসিড এবং অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিড। এর রিবোফ্লাভিনের পরিমাণ বেগুন, মূলা, টমেটো ও শিমের চেয়েও বেশি। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এটি খাওয়া ভালো। জেনে নিন ঢেঁড়সের বিস্ময়কর উপকারী ও ওষুধিগুণ সম্পর্কে-
১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ-
ব্লাড সুগার কমাতে এর বিকল্প নেই। প্রতি ১০০ গ্রাম ঢেঁড়সে ০.০৭ মিলিগ্রাম থায়ামিন, ০.০৬ মিলিগ্রাম নিয়াসিন ও ০.০১ মিলিগ্রাম রিবোফ্লাভিন রয়েছে। যা ডায়াবেটিস রোগীর স্নায়ুতন্ত্রে পুষ্টি সরবরাহ করে সতেজ রাখে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এটা রাখা উচিত।
২. রক্তশূন্যতা রোধ করে:
ঢেঁড়সের হিমোগ্লোবিন, আয়রন ও ভিটামিন কে দেহে রক্ত জমাট সমস্যা রোধ করে, দেহে প্রয়োজনীয় লাল প্লেটলেট তৈরি করে এবং দেহের দুর্বলতা রোধ করে থাকে। তাই রক্তশূন্যতার সমস্যায় বেশি করে ঢেঁড়স খাওয়া ভালো।
৩. প্রাণবন্ত চুল:
সুস্বাদু সবজি ঢেঁড়স চুলের জন্য খুব উপকারী এবং ঢেঁড়সে আছে এমন কিছু উপাদান যা চুলের কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে, খুশকি ও উকুন রোধ করে, স্কাল্পের শুষ্কতা ও চুলকানি দূর করে থাকে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ঢেঁড়সকে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটি ব্যবহারে চুল পড়া কমে। শুধু তাই নয়, চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও ভূমিকা রাখে এটি।
৪. ওজন কমাতে সহায়ক:
ঢেঁড়সের ফাইবার অনেকটা সময় পেট ভরা রাখে ও ভিটামিন উপাদানগুলো দেহে দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত থাকে এছাড়াও ঢেঁড়সে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম তাই এটি ডায়েট মেন্যুতে রাখতে পারেন।
৫. কলেস্টরোলের মাত্রা ঠিক রাখে:
ঢেঁড়সের ফাইবার ও পেক্টিন দেহের খারাপ কলেস্টরোলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে এবং atherosclerosis সমস্যা রোধ করে।
হাঁপানি রোগেঃ-
হাঁপানিতে খুব ভালো কাজ করে ঢেঁড়স। রোগটির হারবাল চিকিৎসায় ওষুধ হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ঢেঁড়স বীজের তেল শ্বাসকষ্ট কমাতে পারে।
৬. প্রোস্টেট গ্রন্থির অসুখেঃ-
এর একটা দারুণ ওষুধিগুণ হলো এটি প্রসাবের প্রবাহ বৃদ্ধি করে। এতে প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি কমে আসে। এটি পানিতে সেদ্ধ করে তরল পিচ্ছিল পদার্থ ছেঁকে পান করলে প্রসাবের প্রবাহ বাড়বে।
৭. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ-
এতে রয়েছে প্রচুর আঁশ যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। সহজে হজম হয় বলে বিপাকক্রিয়ায় সহায়তা করে।
৮. ত্বকের যত্নেঃ-
নিয়মিত ঢেঁড়স খেলে ব্রণ কম হয়। এটি ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করতেও ভালো কাজ দেয়। এটি খাওয়ার ফলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়, এতে ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়ে।
৯. হাড় ও দাঁতের যত্নেঃ-
প্রতি ১০০ গ্রাম ঢেঁড়সে রয়েছে ৬৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ও ১.৫ মিলিগ্রাম আযরন। এটি হাড়কে মজবুত করে। আবার দাঁত ও মাড়ির রোগেও ঢেঁড়স উপকারী।
১০. ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ-
ঢেঁড়সে উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ক্যান্সার রোগ সৃষ্টিকারী কোষগুলোকে ধ্বংস করে ক্যান্সার নিরাময়ে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় কাজ করেঃ-
এ সময় নিয়মিত ঢেঁড়স খেলে এর ফলেট উপাদানটি শিশুদের সঠিকভাবে বিকাশে সাহায্য করে।
এছাড়াও ঢেঁড়সের নানা ধরণের উপাদান আমাদের ত্বকের সমস্যা ও কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, চোখের দৃষ্টি শক্তির উন্নয়ন ইত্যাদি নানা ধরণের কাজে আসে। তাই সুস্থ থাকতে আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন স্বাস্থ্যগুণে ভরপুর ঢেঁড়স।
সতর্কতাঃ-
অন্যান্য সবজির মতো এতেও সামান্য পরিমাণে অক্সালিক এসিড রয়েছে। তাই কিডনিতে পাথর হলে এ সবজিটি এড়িয়ে চলাই ভালো।