কুখ্যাত রাজাকার খুনী শাসছুর রহমান ধরা-ছোয়ার বাহিরে khulna tv

কুখ্যাত রাজাকার খুনী শাসছুর রহমান ধরা-ছোয়ার বাহিরে

খুলনা বিভাগ

খুলনা জেলা প্রতিনিধি : খুলনা হাল সাং ২৬নং ইসলাম পাড়া, লবনচরা থানার অধীনে খুলনার কুখ্যাত রাজাকার খুনী শামছুর রহমান এখনো বহল তবিয়তে তাহার অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। কুখ্যাত রাজাকার খুনী শামছুর রহমান ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময়ে খান-এ সবুরের লাঠিয়াল বাহিনির প্রধান ও খান এ সবুরের প্রত্যক্ষ সহযোগী হিসেবে বিশেষভাবে খুলনা শহরে পরিচিত ছিল।

সে সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে রাজাকারদের সংগে একীভূত হয়ে সে নিজের নেতৃত্ব একটি নতুন ধরনের হত্যাকারী বাহিনী গঠন করেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের বিতাড়িত কারী ও ধর্ষণ-খুন-লুঠতরাজকারী ও ভয় ভীতি প্রদর্শন কারী, জুলুমবাজ, অত্যাচারী, ধর্ষণ কারী রাজাকার শামসুর নেতৃত্বে এবং জাবুসার পিচ কমিটির চেয়ারম্যান মাও: শোকরতুল্লাহর নেতৃত্বে রূপসার জাবুসা গ্রামের মুক্তিযুদ্ধা নিমাই সহ আরো দশ-বারটি পরিবার কে তাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে মালামাল লুট করে ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ঘটায়।

কুখ্যাত রাজাকার সামছুর রহমানের নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনী নভেম্বর ১৯৭১ সালের এর শেষ দিকে বটিয়াঘাটা উপজেলার কড়িয়াভিটা গ্রামের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুকের বাড়িতে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের উপর এক ভয়াবহ হামলা চালায় এতে বহু মুক্তিযোদ্ধা হতহত হয়। এছাড়া খুলনা ফরেস্ট ঘাটে কসাই খানা হিসাবে খ্যাত টর্চার সেলে অসংখ্য নারী-পুরুষকে হত্যা করা হয় যাহার সাথে উক্ত শামসুর রহমান সরাসরি জড়িত। ১৯৭১ এর ১লা এপ্রিল এর ভোর বেলায় খুলনা বাসীর ঘুম ভাঙ্গে মহাদেব চন্দ্রবর্তীসহ ৬ জনকে হত্যার খবর শুনে।

উক্ত হত্যার ঘটনাস্থলে রাজাকার শামসুর রহমানের উপস্থিতি একাধিক মুক্তিযোদ্ধারা সনাক্ত করে। এই নিয়ে খুলনা বাসির মধ্যে ভয়ানক ভীতির সৃষ্টি হয়। ডিসেম্বরের ১০ তারিখে মুক্তির দ্বারপ্রান্তে এসে মুক্তিযোদ্ধা দের নৌকমান্ডরা বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন এর নেতৃত্বে গানবোর্ড নিয়ে খুলনা শহরে প্রবেশের সময় বর্তমান রূপসা ঘাটে পৌঁছালে ভুল ক্রমে ভারতীয় বিমান বাহিনী গানবোর্ড এর উপর বোমা বর্ষণ করলে জাহাজ গুলো ডুবে যায়। তখন আহত মুক্তিযোদ্ধা বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন ও বীর বিক্রম মহিবুল্লাহ আহত অবস্থায় রূপসা নদীর পূর্ব পাড়ে পার হয়ে উপরে উঠলে রাজাকার কমান্ডার শাহজাহান ও রাজাকার শামসুর রহমান এর নেতৃত্বে তাদের কে আটক করে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্মম ভাবে বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন ও বীর বিক্রম মহিবুল্লাহ কে হত্যা করে যাহা স্থানীয় লোক সহ বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধাগণ উক্ত ঘটনার সাক্ষী আছে। কুখ্যাত রাজাকার সামছুর রহমানকে আসামী করে ১৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা একত্র হয়ে কাজী মাহমুদ আলমকে বাদী করে বিজ্ঞ মুখ্য মহানগর হাকীমের আমলী আদালতের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি সি,আর মামলা করে যাহার মামলা নং-৮৮৭/১৭।

যুদ্ধাপরাধের এই মামলা সংক্রন্ত বিষয়ে বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মাহমুদ আলম এর কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন যে,আমরা ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধা একত্র হয়ে আদালতে মামলা করেছি এবং কুখ্যাত রাজাকার খুনী সামছুর রহমানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছি। যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামি কুখ্যাত রাজাকার শামসুর রহমানের কাছে এই মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের কোন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তার ছেলে আলমগীর হোসেন তার সাথে কথা বলতে বলেন।

নিষিদ্ধি জঙ্গি সংগঠনআল্লারদল‘ এর সদস্য আলমগীর হোসেন সাংবাদিকদের কোন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বরং ভয়,ভীতি প্রদর্শন করেন এবং সাংবাদিকদের এই সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য হুমকি প্রদান করেন। খুলনার বীর-মুক্তিযোদ্ধাগণ ও মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত পরিবারের সদস্যগণ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য গণ এই কুখ্যাত রাজাকার শামসুর রহমান ও তার ছেলে নিষিদ্ধি জঙ্গি সংগঠন ‘আল্লারদল’ এর সদস্য আলমগীর হোসেনের শাস্তির জোর দাবি জানিছেন। (চলমান…)

Tagged

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.