ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন শুধু উদ্যোগতাই নয়”তিনি দুইটি গণমাধ্যমের মালিক!
রোগীর ছুতোয় আবারো হাসপাতালে ডেসটিনির রফিকুল’। প্রথম পাতায় এমন শিরোনাম করে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দৈনিক সম্পাদক ও বৈশাখী টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের ব্যক্তিগত আইনজীবী ব্যারিস্টার এম মঈনুল ইসলাম। তিনি বলেন, যে মানুষ বিনাবিচারে ছয় বছর ধরে জেলের ঘানি টানছেন তার বিরুদ্ধে এমন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ উপস্থাপন করে সংবাদ প্রকাশ করা, এটা দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের কতটুকু দায়িত্বশীল আচরণের মধ্যে পড়ে। ওই পত্রিকাটির যে বিশাল পাঠকসমাজ রয়েছে তাদের কাছেও বিষয়টি দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি। শীর্ষস্থানীয় ওই গণমাধ্যমটিকে তার এমন দায়িত্বহীন পেশাদারিত্ব থেকে বেরিয়ে আসারও পরামর্শ দেন এই আইন কর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, মোহাম্মদ রফিকুল আমীন শুধুমাত্র একজন ব্যবসায়ীই নয়, তিনিও দুটি শক্তিশালী গণমাধ্যমের মালিক। তার সম্পাদনায় এ গণমাধ্যম দুটি দেশের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
এক প্রশ্নের জবাবে এই আইন কর্মকর্তা বলেন, যে মানুষ বিনাবিচারে দিনের পর দিন জেল খেটে চলেছেন, কই শীর্ষস্থানীয় দায়িত্বশীল ওই গণমাধ্যমটি তো সে বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করছে না। তবে কে বা কার ব্যক্তিগত অভিপ্রায় পালনে শীর্ষস্থানীয় এই গণমাধ্যমটি ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনকে নিয়ে এমন ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করে চলেছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে এই সিনিয়র আইন কর্মকর্তা বলেন, শীর্ষস্থানীয় ওই গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ইয়াবা ব্যবসায়ী আমিন হুদা ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী তোফায়েল আহমেদ জোসেফের সাথে রফিকুল আমীনকে তুলনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, এটা কতটুকু যৌক্তিক? তিনি আরো বলেন, প্রথমত ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি নন, তিনি একজন ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি আসামি মাত্র। যার বিচার প্রক্রিয়া চলমান। এজন্য তিনি দীর্ঘ ৬ বছর ধরে হাজত বাস করছেন। আর ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন যেহেতু একজন ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি আসামি, সেহেতু অন্যান্য বন্দির সাথে তার তুলনা করা হলুদ সাংবাদিকতার শামিল বলেও মনে করেন বিজ্ঞ এই আইন কর্মকর্তা।
তবে রফিকুল আমীনকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দিতে হবে, তার জানামতে আদালতের এমন কোনো নির্দেশনা নেই দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানের শীর্ষস্থানীয় ওই গণমাধ্যমকে দেয়া এমন বক্তব্যকে ভিত্তিহীন দাবি করে ব্যারিস্টার এম মঈনুল ইসলাম আদালতের রেফারেন্স দিয়ে বলেন, উচ্চ আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া আছে কারা কর্তৃপক্ষকে, ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনের সুচিৎিসা নিশ্চিত করতে হবে। সেই লক্ষ্যে কারা কর্তৃপক্ষ কারাবিধি অনুযায়ী তাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা নিয়েছে। কারণ তাকে দৈনিক পাঁচবার ইনসুলিন নিতে হয়।
আর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের চিকিৎসক বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস শীর্ষস্থানীয় ওই গণমাধ্যমের কাছে তো বলেছেন ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনকে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হৃদরোগ, বহুমূত্র রোগ, কিডনিসহ নানাবিধ সমস্যা থাকায় তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাহলে চিকিৎসকরা যদি রফিকুল আমীনকে অসুস্থতার জন্য উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন সেক্ষেত্রে অন্যের কি বলার থাকতে পারে? এখন রফিকুল আমীনকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে তার বর্তমান চিকিৎসকদের ওপর। এটাতে শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের গাত্রদাহ কেন?
এসময় সিনিয়র এই আইনজীবী দৈনিক ডেসটিনির প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ডেসটিনি গ্রুপের বিরুদ্ধে কারোর কোনো অভিযোগ নেই। শুধুমাত্র দুদকের একটি ধারণাগত অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের দিনের পর দিন এমন কারাবাস। আর ডেসটিনি গ্রুপ তো নিয়ম মেনে ব্যবসা পরিচালনা করেছে বলে সরকারকে ৪১০ কোটি টাকা রাজস্ব প্রদান করতে পেরেছে।
ওই শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় গিয়ে ওই কক্ষের সামনে কোনো পুলিশ সদস্য দেখা যায়নি, তবে গত রোববার সন্ধ্যায় একজন পুলিশ সদস্যকে দেখা গেছে। প্রকৃতপক্ষে এমন কোনো ঘটনা ঘটার কোনো অবকাশই নেই। কারণ বহিঃমেডিকেলে চিকিৎসাধীন একজন কারাবন্দিকে সার্বক্ষণিক পুলিশ এবং কারা সদস্যদের দিয়ে পাহারায় রাখা হয়। সেক্ষেত্রে আসামি কোনো প্রকার পলায়ন করলে তার দায়ভার উভয় সংস্থার কাঁধে বর্তায়। তাই শীর্ষস্থানীয় ওই গণমাধ্যমের ওই প্রতিবেদন যেমন অসত্য ও অবাস্তব, তেমনি উদ্দেশ্যমূলক এবং হাস্যকরও বটে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের চিকিৎসক বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, সাধারণত বন্দিদের আমরা কারা হাসপাতালেই চিকিৎসা দিয়ে থাকি।
স্টাফ রিপোর্টার : সাব্বির হোসেন